ফ্যাক্ট চেকঃ অক্সিমিটার কি নির্জিব বস্তুর পরিমাপ করতে পারে?

Published on:

সারমর্ম

সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে একজন অক্সিমিটারে বিস্কুট ঢোকাচ্ছে এবং অক্সিমিটার সেখানে রিডিং দিচ্ছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একটি বাচ্চা অক্সিমিটারের ভেতরে পেন ঢোকাচ্ছে এবং সেটি রিডিং দিচ্ছে। এই ধরনের ভিডিও দেওয়ার উদ্দেশ্য হল অক্সিমিটার ঠিক করে কাজ করে না, ‘মিডিয়া মানুষকে ভীত করে তুলছে’ অক্সিমিটারের কথা বলে এই ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা ফ্যাক্ট চেক করে দেখে বুঝেছি অক্সিমিটার নির্জীব বস্তুরও রিডিং দেয় এবং তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখাও রয়েছে। আমরা এই দাবী অনেকাংশে মিথ্যা  বলে জানাচ্ছি।

দাবি

প্রথম ভাইরাল ভিডিও যা আমাদের চোখে পড়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি বাচ্চা অক্সিমিটারে রিডিং নেওয়ার জন্য একটি পেন ঢোকাচ্ছে। সংরক্ষিত ভিডিওটি এখানেএখানে দেখতে পারেন ।

সত্যানুন্ধান

অক্সিমিটার কি?

অক্সিমিটার হল ক্লিপের মতো দেখতে একধরনের চিকিৎসা সরঞ্জাম যা ইনফ্রারেড লাইট ব্যবহার করে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা দেখায়। হপকিনস ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ‘পালস অক্সিমেট্রি হল রক্তের অক্সিজেন স্তর (অক্সিজেন স্যাচুরেশন) পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা। এটি আপনার হার্ট থেকে সবচেয়ে দূরের অংশে যেমন হাত ও পায়ে অক্সিজেন কতোটা পৌঁছচ্ছে তা নির্ণয় করার তার একটি সহজ, ব্যথাহীন পরিমাপ পদ্ধতি।’

কিভাবে অক্সিমিটার কাজ করে?

ব্রিটিশ লাং ফাউওন্ডেশন (BLF) তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, “একটি পালস অক্সিমিটার আপনার রক্ত ​ কতটা আলো শোষণ করতে পারে তা পরিমাপ করে। এটা থেকে বোঝা যায় আপনার রক্তে কতোটা অক্সিজেন আছে। পালস অক্সিমিটার আপনার আঙ্গুলের ডগায় দুটো আলো দেখায় অথবা আপনার কানের লতিতে : একটি লাল আলো ও একটি ইনফ্রারেড আলো দেখায়।

বিপিএল, এক শীর্ষস্থানীয় অক্সিমিটার প্রস্তুতকারক আরও ব্যাখ্যা করেছে, ‘আলোর একটুখানি রশ্মি আঙ্গুলের রক্তে প্রবেশ করে, অক্সিজেনের মাত্রা নির্দিষ্ট করে। এটি অক্সিজেনযুক্ত বা অক্সিজেন ছাড়া রক্তে আলো শোষণের পরিবর্তনগুলি পরিমাপ করে। পালস অক্সিমিটার এভাবেই আপনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন কত আছে তা জানিয়ে দেয়।’

পেন, বিস্কুট বা অন্যান্য নির্জীব বস্তুর ক্ষেত্রে অক্সিমিটারে কিভাবে রিডিং পাওয়া যায়?

BPL তাদের ওয়েবসাইটে এর একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানিয়েছে। ‘রোগীর অবস্থা সনাক্ত করা হয় লাল এবং ইনফ্রারেড আলোর পরিমাণের সংবেদনশীলতার উপর ভিত্তি করে যা পালস অক্সিমিটার বা অন্যান্য মেশিনের সেন্সরে ধরা পড়ে। যখন LED এবং ডিটেক্টরের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে বা যন্ত্রের ভেতরে কিছু বস্তু ঢুকিয়ে  বাধার সৃষ্টি করা হয় , তখন মডিউলটি মনে করবে আঙুলই ঢোকানো হয়েছে এবং সে তখন পালস রিডিং শুরু করে দেয়। এই অবস্থায়, ডিটেক্টরের উপর ছড়িয়ে পড়া আলোর বিভিন্ন তীব্রতা একটি স্পন্দন  সৃষ্টি করতে পারে এবং পালস অক্সিমিটারে তার রিডিং দেখা যায়। পালস অক্সিমিটার খুব সংবেদনশীল যন্ত্র। তবে, যদি LED এবং সেন্সরের মধ্যে ব্যবধান পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, যাতে ডিটেক্টরের উপর কোন আলো না পড়ে, তাহলে পালস অক্সিমিটার কোন পালস অনুভব করবে না এবং কোন রিডিং দেবে না।’

এ থেকেই বোঝা অক্সিমিটারে কোন নির্জীব বস্তু ঢোকালেও কিভাবে রিডিং পাওয়া যায়। তার মানে এই নয় যে মানুষের আঙ্গুলের থেকে অক্সিমিটার যে রিডিং দেয় তা ভুল।

BPL পেন্সিল, পেন বা এরকম কোনরকম বস্তু পালস অক্সিমিটারে ঢোকাতে নিষেধ করেছে, কারণ এতে সেন্সর খারাপ হয়ে যেতে পারে এবং সেক্ষেত্রে যন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে।

অক্সিমিটার কি জরুরী?

অক্সিমিটার ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, খেলোয়ার, পর্বতারোহীদের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। এর থেকে বোঝা যায় একজনের ফুসফুস ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা এবং তার শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাচ্ছে কিনা। দীর্ঘক্ষণের জন্য শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বুকে ব্যথা ইত্যাদি সহ গুরুতর শারীরিক সমস্যা তৈরী হতে পারে। এই উপসর্গগুলি থেকে স্বাস্থের অবস্থা বুঝে নেওয়া এবং চিকিত্সার পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই ডাক্তারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অক্সিমিটার বাড়িতে রাখা উচিত কিনা এ নিয়ে ডাক্তাররা একমত নন। যদি এমন কোন রোগী থাকেন যার আগে থেকেই ফুসফুসের রোগ রয়েছে তার কাছে অক্সিমিটার থাকাটা সাহায্য করে। কোভিড-১৯ অতিমারীর সময়, যেখানে করোনা ভাইরাস ফুসফুসেই সংক্রমণ ঘটায় বলে জানা যায়, অনেকেই বাড়িতে অক্সিমিটার নিয়ে এসে তাদের অক্সিজেন লেভেল দেখেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যান মন্ত্রক (MoHFW) একটি নথি প্রকাশ করে বাড়িতে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মোকাবিলা করার পরামর্শ, সেখানে বলা আছে যে সমস্ত কোভিড রোগীর বাড়িতে চিকিৎসা হচ্ছে, তাদের অক্সিজেনের মাত্রা দেখার জন্য দিনে ৩-৪ বার অক্সিমিটারের সাহায্য নিতে হবে।

অক্সিমিটার কি ভরসাযোগ্য?

FDA-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ‘অক্সিজেন স্যাচুরেশন যখন ৮০ শতাংশের নিচে চলে যায় তখন অক্সিমিটারের রিডিংকে খুব একটা ভরসা করা যায় না এবং যখন অক্সিজেন লেভেল ৯০-১০০ শতাংশ থাকে তখন অক্সিমিটারের রিডিংকে ভরসা করা যায়। ‘তাই FDA অ্যাাবসোলিউট থ্রেশোল্ড বা পরম সীমার পরিবর্তে সময়ের সাথে সাথে বারবার পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেয়।

Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.

Disclaimer
Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can further read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.

151,784FansLike
1,143FollowersFollow
250SubscribersSubscribe

READ MORE

Subscribe to our newsletter

Stay updated about fake news trending on social media, health tips, diet tips, Q&A and videos - all about health