Last Updated on March 12, 2024 by Urmimala Sengupta
সারমর্ম
একটি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দাবি করেছে যে একটি মাটির ফুলের পাত্র এবং একটি মোমবাতি ঘর গরম করতে পারে। আমরা সত্য-পরীক্ষা করেছি এবং দাবিটি বেশিরভাগই মিথ্যা বলে পেয়েছি।
দাবি
শীতকালে ঘর গরম করার উপায় নিয়ে অনেক পোস্ট ইন্টারনেটে ছড়িয়ে আছে । তেমনি একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে একটি মাটির ফুলের পাত্র এবং একটি মোমবাতি ঘরকে গরম করবে। পোস্টটি বলে যে এটি ঘরটিকে উষ্ণ করে তুলতে পারে যদি অন্য কোনও উৎস না থাকে।
সত্যানুন্ধান
এই দাবী কী সঠিক?
ঠিক তা নয়। একটি মাটির ফুলদানি ও একটি মোমবাতি কিছুটা তাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু এটা মনে রাখা জরুরি একটি ঘর গরম করতে, বিশেষত ঠান্ডার সময় এই তাপ যথেষ্ট নাও হয়ে পারে।
এটি একটি ডিআইওয়াই বা নিজে করো প্রক্রিয়া যাকে বলা হয়, ‘ফ্লাওয়ার পট হিটার’ বা ‘ক্যান্ডেল হিটার’। এতে একটি উল্টে যাওয়া মাটির ফুলদানির ভেতরে একটি জ্বলন্ত মোমবাতি বসানো হয়, পাত্রটি হিট ডিফিউসার হিসেবে কাজ করে।
এই মূল বিষয়টি হল যে মোমবাতিটি ফুলের পাত্রের ভেতরে বাতাসকে গরম করে এবং পাত্রটি ঘরে সেই তাপ বিকিরণ করে।
এই পদ্ধতিতে একটি ছোট নির্দিষ্ট জায়গার জন্য তাপ হয়ত তৈরী হতে পারে। কিন্তু সাধারণভাবে গরম করার জন্য এটি নির্ভরযোগ্য বা কার্যকরী উপায় নয় এবং পুরো ঘর যথেষ্ট পরিমাণে গরম করতে এটা উপযোগী নয়।
একটি মাত্র মোমবাতি এবং ফুলদানি পুরো ঘরের তাপমাত্রা, বিশেষ করে বড় জায়গায় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলার জন্য যথেষ্ট তাপ তৈরী করতে পারে না। তবে মাটির পাত্র কিছু তাপ শোষণ এবং বিকিরণ করতে পারে, কিন্তু তা খুব অল্প মাত্রায় এবং এটি কার্যকরী উপায় নয়। এছাড়াও, এটি থেকে পাত্রের আশেপাশে গরম হয়ে উঠতে পারে, যেরকম ফায়ারপ্লেসের ধারে বসে থাকলে মনে হয় কিন্তু এথেকে পুরো ঘর সমানভাবে গরম হতে পারে না।
আমরা এই দাবি সম্পর্কে এমকেসিজি, ওড়িশার ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজিস্ট ডাঃ রোহন পান্ডে (এমবিবিএস, এমডি) কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি জানিয়েছেন, “কুড়ে ঘর গরম করার জন্য এই পাত্রের পদ্ধতি চীনে প্রাচীন কালে ব্যবহৃত হত। যদিও এমিশন একটি ফিল্টার ছাড়া দেখা যায় না, সেখান থেকে এর কাছাকাছি কিছুটা তাপ দিতে পারে। তবে, জলবায়ুর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং গৃহনির্মাণ পরিকাঠামোর পরিবর্তনের জন্য, প্রাচীন ব্যবস্থার পরিবর্তে আধুনিক হিটার বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।“
ক্যান্ডেল হিটার থেকে কী কোন নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগ রয়েছে?
কিছুটা থাকতে পারে। মাটির ফুলদানির মধ্যে মোমবাতি জ্বালালে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা হতে পারে। প্রথমত, মোমবাতির জ্বলতে থাকা শিখা থেকে আগুন ধরে পুড়ে যাওয়ার ভয় থাকতে পারে। যদি কেউ নজর না করেন বা পড়ে যায় তবে মোমবাতি থেকে আগুন লেগে পুড়ে গিয়ে জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে, বা এমনকি বাড়িতেও আগুন লেগে যেতে পারে। এছাড়াও, মোমবাতির জ্বলন্ত শিখার জন্য মাটির পাত্রটি খুব গরম হয়ে ওঠে, এতটাই এর তাপমাত্রা বেড়ে যায় যদি এটিকে স্পর্শ করা হয় তবে দেহাংশ পুড়ে যেতে পারে – বিশেষ করে অজ্ঞতার জন্য ছোট ছেলে-মেয়ে ও পোষ্য প্রানীদের ক্ষতি হতে পারে।
আরও একটি শারীরিক সমস্যা হতে পারে তা হল কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া। একটি বদ্ধ ঘরে মোম জ্বালানো থাকলে তা থেকে বর্ণহীন ও গন্ধহীন কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস তৈরী হয়, এটি একটি বিষাক্ত গ্যাস, এর থেকে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এর কারণে মাথাব্যাথা, মাথা ঘোরা, বমি-বমি ভাব এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বাতাসের গুণমান অন্য আর একটি বিষয়, মোমবাতি যখন জ্বলে তখন ঝুলকালি এবং অন্যান্য দূষক তৈরি করে। এই দূষকগুলি, বিশেষত যেখানে বায়ু চলাচল ঠিক নেই, বা কারুর হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাদের ফুসফুসে সমস্যা তৈরী করতে পারে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যায় তা আরও জটিল হয়ে পড়তে পারে।
রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা আর এক উদ্বেগের বিষয়, বিশেষ করে যেসমস্ত মোমবাতি প্যারাফিন ওয়াক্স দিয়ে তৈরী। জ্বলতে থাকার সময় প্যারাফিন ওয়াক্স থেকে টলুইন বা বেনজিনের মত রাসায়নিক বের হয় যা থেকে শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগ, ক্যানসার বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও, তাপের জন্য মোমবাতি জ্বালানো থেকে বাতাস শুষ্ক হয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে। দুর্বল মানুষজনদের জন্য, যেমন বৃদ্ধ বা শিশুদের জন্য এটি যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ।
Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.