Last Updated on February 28, 2024 by Team THIP
সারমর্ম
একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্টে দাবী করা হয়েছে যে কাঁচা লঙ্কা প্রতিদিন খেলে তা ফুসফুসের ক্যানসার থেকে দূরে রাখে। আমরা এর ফ্যাক্ট চেক করে দেখে জেনেছি এই দাবী অনেকাংশে ভুল।
ফুসফুসের ক্যানসার কী?
ফুসফুসের ক্যানসার হল দ্বিতীয় সর্বাধিক পরিমানে হওয়া ক্যানসার এবং বিশ্বব্যাপী পুরুষ ও মহিলা দুয়েরই মৃত্যুর প্রধান কারণ। এটি অনেক দেশে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমানে স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করেছে এবং এর প্রকোপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক কারণ হল ধূমপান, কারণ তামাকের ধোঁয়ায় ৬০ টিরও বেশি পরিচিত কার্সিনোজেন থাকে। পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (পিএইচএএস), যেমন বেনজো(এ) পাইরিন (বি(এ)পি), তামাকের ধোঁয়ায় পাওয়া কার্সিনোজেনগুলির মধ্যে উল্লাখযোগ্য এবং ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কোন কোন বিষয়গুলি ফুসফুসের ক্যানসারের কারণ হতে পারে?
১। ধূমপানঃ তামাক ধূমপান ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান কারণ। ধূমপান ছেড়ে দেওয়া বা কখনো শুরু না করা ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
২। পরোক্ষ ধূমপানঃ ধূমপায়ীদের থেকে নির্গত পরোক্ষ ধোঁয়ার সংস্পর্শ এড়ানো, ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩। রেডনের সংস্পর্শঃ রেডন একটি প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয় গ্যাস যা ঘরে প্রবেশ করতে পারে। রেডনের মাত্রা পরীক্ষা করা এবং সংস্পর্শ কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
৪। অ্যাসবেস্টস সংস্পর্শ: অ্যাসবেস্টসের সংস্পর্শ কমিয়ে আনা, এগুলি সাধারণত কিছু কাজের জায়গায় বা পুরানো বাড়িতে পাওয়া যায়, ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫। অন্যান্য কিছু পদার্থ যা ক্যানসারের কারণ তাদের সংস্পর্শঃ বিশেষ কিছু পদার্থের সংস্পর্শ কম করা বা এড়িয়ে চলা এধরনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে যেগুলি কার্সিনোজেনিক হিসাবে পরিচিত যেমন তেজস্ক্রিয় আকরিক, আর্সেনিক বা ডিজেল ধোঁয়া।
৬। বায়ু দূষণঃ আশেপাশের বায়ু দূষণের সংস্পর্শ কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া, যেমন খুব বেশি পরিমাণে দূষিত এলাকাগুলি এড়ানো বা উপযুক্ত বায়ু শোধনের ব্যবস্থা ব্যবহার করা উপকারী হতে পারে।
৭। ফুসফুসের ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস: যদিও পারিবারিক ইতিহাস পরিবর্তন করা যায় না, তবুও ফুসফুসের ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস যাদের রয়েছে তারা এখনও তাদের সামগ্রিক ঝুঁকি কমাতে তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলিকে সংশোধন করার দিকে নজর দিতে পারেন।
নিয়মিত কাঁচা লঙ্কা খাওয়া কী ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে?
এর একটা খুব সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে। কাঁচা লঙ্কার মধ্যে পাওয়া ক্যাপসাইসিন নামক একটি যৌগ ফুসফুসের ক্যানসারের কোষে ক্যানসার প্রতিরোধকারী প্রভাব ফেলে। এটি কোষের বৃদ্ধি রোধ করে এবং ক্যানসার কোষের পথ বন্ধ করার কাজ করে, যা ক্যানসার বেড়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। ক্যাপসাইসিন যে পদ্ধতির মাধ্যমে ক্যানসারকে বাধা দেয় তা হল মাইটোকন্ড্রিয়ার ওপর লক্ষ্য স্থির করে এবং মাইটোকন্ড্রিয়াল রেসপিরেশনকে বাধা দেয়। এটি কোষের ভেতরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করে, এর ফলে ফুসফুসের ক্যানসারের কোষের ক্ষয় হয়। এর থেকে বোঝা যায় যে ক্যাপসাইসিন হয়ত ফুসফুসের ক্যানসারের চিকিৎসায় মাইটোকন্ড্রিয়া-লক্ষ্য করে যা চিকিৎসা রয়েছে সেখানে বিশেষ কাজে আসতে পারে।
কিন্তু ক্যাপসাইসিন, কাঁচা লঙ্কার প্রধান সক্রিয় উপাদান, এটির সুরক্ষা এবং ক্যানসারের ক্ষেত্রে এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাপসাইসিন একইসঙ্গে একটি কার্সিনোজেন এবং ক্যানসার রোধকারী এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে পারে, কিন্তু পরস্পরবিরোধী মহামারী সংক্রান্ত তথ্য এবং গবেষণার ফলাফলে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রয়েছে। ক্যাপসাইসিন নিউরনগুলিকে সংবেদনশীল করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত, যা ব্যথা কমানোর ক্রিমগুলিতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, বহুদিন ধরে ক্যাপসাইসিন প্রয়োগ করলে টিউমার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইঁদুরের ত্বকের কার্সিনোজেনেসিস বাড়তে দেখা গেছে। এর থেকে বোঝা যায় যে সূর্যের আলোর মতো টিউমার প্রোমোটারগুলির পাশাপাশি ক্যাপসাইসিন-যুক্ত স্থানীয় বা টপিকাল অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহার করার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা ভীষণভাবে জরুরী।
বিলাসপুরের অ্যাপোলো ক্যান্সার সেন্টারের চিফ রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট ডাঃ সার্থক মোহারির -এর মতে, “ফুসফুসের ক্যানসারের প্রতিরোধের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রতিকারের উপায় হল ধূমপান বন্ধ করা যা ফুসফুসের ক্যানসারের একটি পরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকির কারণ। অন্য কোনো ‘প্রাকৃতিক প্রতিকার’ ফুসফুসের ম্যালিগন্যান্সি বা ক্যানসারে কোনরকম প্রতিরোধমূলক ভূমিকা নেয় না।”
Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.