Last Updated on March 5, 2024 by Urmimala Sengupta
সারমর্ম
একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্টে দাবী করা হয়েছে রসুনের কোয়া প্রতিদিন স্কাল্পের নির্দিষ্ট এলাকায় লাগালে চুল গজিয়ে ওঠে। আমরা এর ফ্যাক্ট চেক করে দেখে জেনেছি এই দাবীর অর্ধেকটা ঠিক।
দাবি
সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্টে বলা হয়েছে রসুনের কোয়া প্রতিদিন স্কাল্পের নির্দিষ্ট এলাকায় লাগালে যাদুকরীভাবে এক সপ্তাহের মধ্যে চুল গজিয়ে ওঠে। এই ধরণের পোস্ট আরো অনেক ছড়িয়ে আছে | এইমত একটি পোস্ট এখানে দেখা যাবে|
সত্যানুন্ধান
চুল পাতলা হয়ে যাওয়া/পড়ে যাওয়ার কারণগুলি কী কী?
অস্বাস্থ্যকর চুলের পরিচর্যা যেমন, খুব বেশি পরিমাণে চুলের সৌন্দর্য্যচর্চা, রুক্ষ জিনিসের সংস্পর্শে আসা এবং গোড়া শক্ত করে চুল বাঁধার কারণে চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে। প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব যেমন আয়রন, ফলিক অ্যাসিডের অভাব এবং সেই সঙ্গে মানসিক চাপ চুলের স্বাস্থ্যের ওপরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, চুল পাতলা হয়ে আসার আরো কিছু কারণ আছে যেমন, জিনগত, হরমোনের পরিবর্তন, ওজন কমে যাওয়া, অটোইমিউন রোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা, ত্বকের সমস্যা, সংক্রমণ বা ভিটামিন ডি-র অভাব।
রসুন কী চুলের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করতে পারে?
হ্যাঁ। ২০২২ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে রসুনের ইমিউন-মডুলেটিং বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা যা একটি অটোইমিউন অবস্থা, এতে চুলের ক্ষতি হয়, এর চিকিৎসায় কার্যকরী হতে পারে। রসুন ও পেঁয়াজ, দুটিই অ্যাসপারাগাস গোত্রের সবজি, দুয়ের মধ্যেই ডায়ালাইল ডিসালফাইড থাকে, এই বৈশিষ্ট্যর জন্য এর ঔষধিগুণ থাকতে পারে। চুল আবার গজানোর জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি থাকলেও রসুনের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, ইমিউনোমডিউলেটরি এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য এটিকে চমৎকার একটি সম্ভাব্য বিকল্প করে তোলে।
২০২১ সালের একটি গবেষণায় বলা হয় বহুদিন ধরে এর বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট্যের জন্য রসুনের ব্যবহার হয়ে আসছে এবং বর্তমানে একে খুসকি নিয়ন্ত্রণের একটি সম্ভাব্য উপায় বলে মনে করা হয়। এর অন্যতম মূল উপাদান হল অ্যালিসিন, যা সালফারে ভরপুর এবং চুল পড়ে যাওয়ার চিকিৎসায় তা বিশেষ কার্যকরী। এটির জন্য চুল পরে যাওয়ার সমস্যা সমাধানে রসুনকে একটি প্রতিশ্রুতিপূর্ণ উপাদান বলে মনে করা হয়।
স্কাল্পে বা মাথার ত্বকে সরাসরি রসুন লাগানোর কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে?
স্কাল্পে বা মাথার ত্বকের টাক পড়ে যাওয়া অংশে রসুনের কোয়া লাগানোর দাবি নিয়ে ২০২০ সালে একটি গবেষণা করা হয়েছিল। রিপোর্টে চর্মরোগের অবস্থায় রসুনের প্রয়োগে বেশ কিছু খারাপ ফল উঠে আসে। কেউ কেউ অ্যালার্জি বা জ্বালা যন্ত্রণা চুলকানির সমস্যাযুক্ত ডার্মাটাইটিস, ছত্রাক, অ্যানজিওডিমা, পেমফিগাস, অ্যানাফিল্যাক্সিস এবং ফটোঅ্যালার্জির মত সমস্যা অনুভব করতে পারেন। রসুনের অ্যালার্জেনিক উপাদান, যেমন ডায়ালিল ডিসালফাইড, অ্যালিল প্রোপিল সালফাইড এবং অ্যালিসিন, এধরনের প্রতিক্রিয়াগুলির জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। বিশেষ জায়গায় রসুন ব্যবহার করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি জ্বালা যন্ত্রণা চুলকানির সমস্যাযুক্ত ডার্মাটাইটিস এবং কেমিকেল বার্ণের কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যখন অক্লুসিভ ড্রেসিংয়ের মাধ্যমে লাগানো হয়। রসুনের অ্যালার্জি থাকতে পারে এমন ব্যক্তিদের জন্য রসুনের অ্যালার্জেনের প্যাচ টেস্ট করার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। যদিও রসুনের কিছু বিশেষ উপকারিতা রয়েছে, তবে ওষুধের উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করার সময় সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও সচেতন হওয়া এবং সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য।
একজন বিশিষ্ট ডার্মাটোলজিষ্ট, ডাঃ জ্যোতি কান্নানগাথের বক্তব্য অনুসারে, যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের ঐ বিশেষ অঞ্চলে লাল রঙের ফুসকুড়ি, হাইভ বা আমবাত, চুলকানি, ইনফ্ল্যামেশন, বা ফুলে যাওয়া ইত্যাদির মধ্যে কোন একটি বা একাধিক লক্ষণ দেখা যেতে পারে।
এছাড়াও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে ঘরোয়া প্রতিকারের উপায়গুলি ব্যবহার করার সময়ে মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার সহজলভ্যতার জন্যও এই ধরণের ঘরোয়া উপায়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে, চুলের বৃদ্ধির দ্রুত ঘরোয়া উপায় ইত্যাদির মত প্রতিকারের দাবী নিয়ে এই ঘরোয়া উপায়গুলি আরো ছড়িয়ে পড়ছে।
নিজে থেকে চিকিৎসা করার সমস্যা নিয়ে ডাঃ কান্নানগাথ বলেছেন, “নিজে থেকে এসব চিকিৎসা করা কখনো কখনো ঝামেলার এবং সেই সঙ্গে সঠিক ভাবে প্রয়োগের উপায় না জেনে এগুলির প্রয়োগ করার ফলে সংক্রমণ হতে পারে। এ ধরণের জিনিসের ক্রমাগত প্রয়োগে ফলিকিউলাইটিস হতে পারে, এটি হল ত্বকে ছোট ফোঁড়ার মত কিছু তৈরি হওয়া, এই জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।“
Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.