Last Updated on September 28, 2023 by Team THIP
সারমর্ম
একটি সোশাল মিডিয়ায় দাবী করা হয়েছে আপেল খেলে মাইগ্রেনের ব্যথায় আরাম হয়। আমরা এর ফ্যাক্ট চেক করে দেখে জেনেছি এই দাবী ভুল।
দাবি
আপেল খেয়ে মাইগ্রেনের ব্যাথা ঠিক করে দেওয়ার ভ্রাত্বিকর দাবি নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট প্রকাশিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া এবং হেলথ ব্লগসগুলোতে । তার মধ্যে কয়েকটা দেখা যাবে এখানে ও এখানে ।
সত্যানুন্ধান
মাইগ্রেন কী?
মাইগ্রেন হল একধরণের মাথাব্যথা যা মাথার এক পাশে হয় এবং ওই জায়গা দপ দপ করে বা কেঁপে ওঠার মত অনুভূতি হয়। ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের আলো বা শব্দে অসুবিধা বোধ করা, গা বমি-বমি, এবং বমি হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত চলতে পারে আর এতে রোজকার কাজকর্ম ব্যাহত হয়। সৌভাগ্যবশত, কিছু এর ওষুধ রয়েছে যাতে কিছু মাইগ্রেনের ব্যথা আটকাতে ও তার তীব্রতা কমাতে পারে। ওষুধের সঙ্গে কিছু নিজে থেকে করা উপায়ের সাহায্য ও লাইফস্টাইলের খানিকটা পরিবর্তন একসাথে করলে এই অবস্থায় উপকার পাওয়া যায়।
আপেল খেলে কী মাইগ্রেনের ব্যথায় আরাম হয়?
ঠিক তা নয়। আপেল যে মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে পারে তার নির্দিষ্ট করে কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। কিন্তু ২০২০ তে প্রকাশিত গবেষণায় এই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যা মাইগ্রেনের লক্ষণ তৈরী করতে বা কম করতে ডায়েট বা খাবারের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এর ফলে মাইগ্রেনের রিস্ক ফ্যাক্টর থেকে ব্যথায় উপকার পাওয়া-খাবারের পরিবর্তন একটা আবশ্যক বিষয় হিসেবে ধরা হয়। ডায়েট কীভাবে মাইগ্রেনে প্রভাব ফেলে তা পুরোপুরি বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
গবেষণায় আরো বলা হয়েছে যদি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত একজন যোগ্য মানুষের সঠিক পর্যবেক্ষণ ছাড়া এক্ষেত্রে পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। তাই, লাইফস্টাইল এবং বিহেভিয়ারাল বা আচরণগত পরিবর্তনের প্রতি নজর দেওয়া যা মাইগ্রেনের অ্যাটাক
আটকাতে বা দেরি করিয়ে দিতে সাহায্য করতে পারে, যেমন সঠিক পুষ্টি এবং হাইড্রেশন বা জলের ভারসাম্য বজায় রাখা, ভাল ঘুমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, রিল্যাক্স বা শিথিল করার কৌশল এবং সামাজিক কজকর্মে অংশ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। একটি সামগ্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে মাইগ্রেনের ব্যথায় যারা কষ্ট পান তারা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে ও এর লক্ষণগুলো আরো ভালোভাবে সামলাতে পারেন।
নিউরোলজিষ্ট ডাঃ অভিষেক জুনেজা জানিয়েছেন, ‘ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এ ভরপুর তাজা ফল এবং শাক-সবজি সমৃদ্ধ একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, আপেল যদিও পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল, তবুও বিশেষ করে মাইগ্রেনের ব্যথায় এর থেকে উপকার হয় কিনা তার কোন প্রমাণ নেই’।
ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে আপেল খেয়ে বাড়িতে মাইগ্রেনের ব্যথা সারানোর চেষ্টা করায় কী কী ক্ষতি হতে পারে?
খাবার হিসেবে আপেল স্বাস্থ্যকর হলেও, ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে শুধুমাত্র এর ওপর ভিত্তি করে মাইগ্রেন সারানোর চেষ্টায় ঝুঁকি থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণের জন্য মাইগ্রেন হতে পারে এবং সব মাইগ্রেন খাবার থেকে হয় না। সাধারণত মাইগ্রেনের সঙ্গে অন্যান্য মাথাব্যথাগুলিকে এক করে ফেলা বা মাইগ্রেন খাবার থেকে হয় এরকম ভুল রোগ নির্ণয়ের সম্ভবনা রয়েছে। এতে সঠিক চিকিৎসা পেতে দেরি হয়ে যেতে পারে ও তার ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়তে পারে।
নিউট্রিশনিষ্ট প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু খাবারের কারণে মাইগ্রেন হওয়া সাধারণ ব্যাপার, এবং এই খাবার গুলিকে চিহ্নিত করা এবং এড়িয়ে চললে লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, যেহেতু মাইগ্রেন একটি জটিল অবস্থা যা সামলানোর জন্য বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন, খালি পেটে একটি আপেল খাওয়া নিশ্চিতভাবে মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে করতে পারে না’।
এছাড়া, মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে শুধুমাত্র আপেল খাওয়া বা অল্প কিছু খাবারে আটকে থাকলে তা থেকে পুষ্টির অভাব ও ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর এর খারাপ প্রভাব পড়ে ও এতে মাইগ্রেনের লক্ষণগুলি বেড়ে যেতে পারে। মোটের ওপর, বেশি পরিমাণে আপেল খাওয়া বা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ডায়েটে গুরুত্বপূর্ণ বদল করলে তা থেকে খারাপ ফল হতে পারে যেমন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, অ্যালার্জি।
এর বাইরে, যদি কোন বিশেষ শারীরিক কারণে মাইগ্রেন হয়, যেমন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা নিউরোলজিকাল সমস্যা, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপেলের ওপর ভরসা করে থাকলে সঠিক চিকিৎসা পেতে দেরি হয়ে যেতে পারে। এতে ঐ বিশেষ শারীরিক সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে ও জটিল হয়ে পড়তে পারে।
এর আগে, দ্য হেলথি ইন্ডিয়ান প্রজেক্ট (থিপ মিডিয়া) মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিল যে আপেলের বীজ বিষাক্ত ও তা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এগুলি গুঁড়ো করে বা চিবিয়ে খেলে ক্ষতিকারক হতে পারে। এছাড়া, হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এক নিবন্ধে জানিয়েছিল আপেলের খোসায় কীটনাশক থাকতে পারে ও ফলের ভেতরেও তা ঢুকে যেতে পারে। তাই, আপেল ধুয়ে ও খোসা ছাড়িয়ে খেলে কীটনাশকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.