ফ্যাক্ট চেকঃ WHO কি এই সাতটি অভ্যাসকে ব্রেনের পক্ষে ক্ষতিকারক বলে চিহ্নিত করেছে?

Published on:

সারমর্ম

একটি ফেসবুক পেজে WHO-র লোগো দিয়ে সাতটি ব্রেনের পক্ষে ক্ষতিকারক অভ্যাসের তালিকা দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টির সূত্র এবং সাতটি যুক্তিই খতিয়ে দেখেছি। আমাদের তদন্তে উঠে এসেছে, এই মেসেজটির কোন সত্যতা নেই।

দাবি

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর একটি ছবি ব্যবহার করে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী সাতটি অভ্যাসের তালিকা দিয়ে এগুলি ‘ব্রেনের পক্ষে ক্ষতিকারক’ বলে দাবি করে পোষ্ট করেছেন। সংগৃহিত পোষ্টটি এখানে দেখা যাবে ।

সত্যানুন্ধান

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন কি এরকম কোন মেসেজ ইস্যু করেছে?

না, এধরনের কোন মেসেজ ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) ইস্যু করেনি। আমরা হু-র ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখেছি কিন্তু এরকম কিছু খুঁজে পাইনি।

এই মেসেজটি কে ভালোকরে দেখলে (যা ওপরে দেওয়া হয়েছে) বোঝা যাবে এতে অনেক ব্যাকরণগত ও বানান ভুল রয়েছে, এতেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এটা হু–র কোন অফিসিয়াল মেসেজ নয়।

এই ৭ টি দাবীর স্বপক্ষে কি কোন যুক্তি রয়েছে?

আমরা সাতটি দাবিকেই এক এক করে তুলে ধরে খতিয়ে দেখেছি আর সেগুলি এরকম – 

দাবী ১ – ব্রেকফাস্ট না খেলে ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে

এখানে এবং এখানে যে সমস্ত রিপোর্ট দেওয়া আছে সেগুলিতে বলা হয়েছে ব্রেকফাস্ট না খেলে অনেক রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে যেমন খিদে চলে যাওয়া এবং মোটা হয়ে যাওয়া। যদিও এর সঠিক কোন গবেষণা নেই যার মাধ্যমে জানা যায় ব্রেকফাস্ট না খেলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে।

দাবী ২ – দেরী করে ঘুমালে ব্রেন ড্যামেজ হতে পারে

বিভিন্ন গবেষণার প্রকাশিত তথ্য এখানে এবং এখানে দেওয়া আছে যেখানে বলা হচ্ছে ঘুম না হলে বা পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ব্রেনের ওপর প্রভাব পরে, যা অ্যালঝাইমার রোগেরও কারণ হতে পারে। কিন্তু তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া বা দেরীতে ঘুম কোনরকম শারীরিক সমস্যার সঙ্গে জড়িত নয়।

দাবী ৩ – বেশী মাত্রায় মিষ্টি জিনিস খেলে ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে

মিষ্টি জিনিস কম খেলে ব্রেনের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। প্রানী ভিত্তিক গবেষনায় দেখা গেছে বেশী মিষ্টি খেলেও মনে রাখার ক্ষমতার উপর প্রভাব পড়ে।

“ব্রেন তার প্রধান জ্বালানী হিসাবে চিনির উপর নির্ভরশীল। সে এটা ছাড়া চলতে পারে না,” বেথ ইসরায়েল ডিয়াকনেস মেডিকেল সেন্টারের এমডি, পিএইচডি, এইচএমএস অ্যাসোসিয়েট প্রফেসার ভেরা নোভাক হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে এ কথা বলেছেন

ওই একই আর্টিকেলে বলা আছে, “যদিও ব্রেনের গ্লুকোজ দরকার কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রায় ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে। লস অ্যাঞ্জেলেস ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ায় একদল গবেষক ২০১২-য় প্রানীদের ওপর গবেষণা চালিয়ে কোষের বুড়িয়ে যাওয়া ও চিনির আর এক রূপ ফ্রুক্টোজের ব্যবহারের মধ্যে একটা ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে ২০০৯ এ ইউনিভার্সিটি অফ বোষ্টন ও মন্ট্রিয়লের একদল বিজ্ঞানী এরকম প্রানীদের ওপর গবেষণা চালিয়েই দাবী করেছিলেন অতিরিক্ত মাত্রায় গ্লুকোজ শরীরে গেলে স্মৃতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং স্মৃতিজনিত আরও কিছু ক্ষতি হতে পারে।

দাবী ৪ – বেশী ঘুমালে বিশেষত সকালে ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে

এটাতে কিছুটা সত্যতা আছে। কেমব্রিজ ব্রেন সাইন্সেস এবং ব্রেন অ্যান্ড মাইন্ড ইন্সটিটিউটের ঘুম সংক্রান্ত একটি গবেষনায় দেখা গেছে ব্রেনের কাজকর্ম সঠিক রাখার জন্য প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। কম ঘুম বা অতিরিক্ত ঘুম দুটোই ব্রেনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

হার্ভার্ডের নার্সেস হেলথ গ্রুপ এরকমই একটা গবেষণা করে জানায় দুটোই অর্থাৎ খুব কম বা খুব বেশী ঘুম স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে ভালো নয়।

সকালে ঘুমের কারণে বিশেষ কোন শারীরিক সমস্যা হয় কিনা তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যদিও গবেষকরা জানিয়েছেন রাতে আট ঘন্টার বেশী ঘুম জ্ঞান সংক্রান্ত ক্ষমতা ও যুক্তির দক্ষতা কমিয়ে দেয়, তবে তাকে ঠিক ‘ব্রেন ড্যামেজ’ বলা যায় কিনা তা নিশ্চিত করে বলা হয়নি।

দাবী ৫ – টিভি বা কম্পিউটার দেখতে দেখতে খাবার খেলে ব্রেন ড্যামেজ হতে পারে

টিভি দেখতে দেখতে খেলে বেশী খাওয়া হয়ে যেতে পারে আর তার ফলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, এরকমটাই জানা গেছে অ্যামেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন এ প্রকাশিত একটি গবেষনায়। যদিও একই সঙ্গে খাবার খাওয়া ও টিভি দেখার কোন সরাসরি সম্পর্ক এ থেকে বোঝা যায়নি।

দাবী ৬ – ঘুমের সময় টুপি, স্কার্ফ ও মোজা পরে থাকলে ব্রেন ড্যামেজ হতে পারে

২০০৭ এর একটি গবেষনায় জানা গেছে যারা(প্রাপ্তবয়স্ক) বিছানায় সাধারণ বা গরম মোজা পরে শুতে যায় তাদের ঘুম আসে তাড়াতাড়ি। ১৯৯৯ সালে নেচার.কম এও এরকম একটি গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল

দাবী ৭ – প্রসাব বা ইউরিন চেপে রাখলে ব্রেন ড্যামেজ হতে পারে

গবেষকরা জানিয়েছেন নার্ভের অসুখ হলে ব্লাডার কন্ট্রোল বা ইউরিন ধরে রাখার ক্ষমতা চলে যেতে পারে। তবে এর বিপরীত অবস্থার কথা এখনো প্রমানিত হয়নি।

ইউরিন চেপে রাখা বা বন্ধ করে রাখা থেকে অন্যরকম শারীরিক সমস্যা যেমন কিডনি স্টোন, ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন এগুলি হতে পারে কিন্তু ব্রেন ড্যামেজ নয়।

Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.

Disclaimer
Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can further read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.

151,356FansLike
1,140FollowersFollow
250SubscribersSubscribe

READ MORE

Subscribe to our newsletter

Stay updated about fake news trending on social media, health tips, diet tips, Q&A and videos - all about health