সারমর্ম

একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্ট ঘুরছে যেখানে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আর ব্যায়ামই যথেষ্ট কোভিড-১৯ কে দূরে রাখার জন্য, ভ্যাক্সিন নেওয়ার দরকার নেই। আমরা এটির ফ্যাক্ট চেক করে দেখে জানাচ্ছি এটি অনেকাংশে ভুল।
দাবি
কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার দাবী করছেন শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা প্রতিরোধ ক্ষমতা কোভিডকে ‘স্বাভাবিকভাবে’ই দূর করতে পারে। এধরনের পোষ্টে ভ্যাকসিনের গুরুত্ব কম করে দেখিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ব্যায়াম আর ভালো ডায়েটই যথেষ্ট। এধরনের পোষ্ট এখানে, এখানে এবং এখানে দেখতে পাবেন।
সত্যানুন্ধান
ভালো ডায়েট আর ব্যায়াম কি কোভিড-১৯ কে আটকে রাখতে পারে?
কিছুটা পারে। এগুলি কিছুটা সাহায্য করতে পারে কিন্তু কোভিড-১৯ প্রতিহত করার এটিই একমাত্র উপায় নয়।ভালো খাবার, ভালো ঘুম এবং ব্যায়াম খুব ভালো ইমিউন সিস্টেম তৈরীতে সাহায্য করে। বেশ কিছু গবেষণা আছে যেমন, এখানে এবং এখানে দেখানো হয়েছে শরীরের ভালো ইমিউন সিস্টেম ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও টক্সিন বা বিষ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারে।
শুধুমাত্র ভালো ডায়েট, ভালো ব্যায়াম এবং ইমিউন সিস্টেম কি কোভিড-১৯ সারিয়ে তুলতে যথেষ্ট?
না। শুধুমাত্র ভালো ইমিউন সিস্টেম কোভিডকে ঠেকিয়ে রাখতে বা সারিয়ে তুলতে যথেষ্ট নাও হতে পারে।
সম্পূর্ণ সুস্থ এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় ব্যক্তিদের ভাইরাসে আক্রান্ত এবং মারা যাওয়ার বেশ কিছু খবর রয়েছে। ভারতে এবং সারা বিশ্বে অনেক খেলোয়াড় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এই বিষয়ে একাধিক গবেষকের প্রকাশিত একটি বিশদ পর্যালোচনায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে কোভিড -১৯ এর মতো একটি নতুন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম তৈরি হতে সময় নেয়। এটি প্রকাশিত হয় ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ার আগেই। গবেষকরা ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন, একটি সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিস্কার না হওয়া পর্যন্ত কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে ভাল খাবার এবং ব্যায়ামের পরামর্শও দিয়েছেন, কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের ইমিউন সিস্টেমের সীমাবদ্ধতাও উল্লেখ করেছেন। “বেশিরভাগ সময়, ইমিউন সিস্টেম নতুন কিছুর মুখোমুখি হয় এবং এটিকে ক্ষতিকারক নয় বলে মনে করে….যখন শরীর প্রথমবার জীবাণু বা ভাইরাসের মুখোমুখি হয়, তখন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং শরীর অসুস্থ হতে পারে। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে এটাই ঘটেছে”, তারা লিখেছেন।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ লক্ষণ জেসানি বলেছেন, “ব্যাকটেরিয়াও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবার নেই। এধরনের সংক্রমণ রুখতে অ্যান্টিবডির প্রয়োজন। স্বাভাবিকভাবে এই অ্যান্টিবডি তৈরী হতে পারেনা। ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসরা জানে কিভাবে এই ইমিউনিটির জাল ছিঁড়ে বেরোতে হয় এবং ক্রমাগত মিউটেশন বা পরিবর্তিত হতে থাকে। ভ্যাকসিন শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরী করে, তাই আমাদের ভ্যাকসিন নেওয়া প্রয়োজন, যা সংক্রমণ রুখতে যে অ্যান্টিবডির দরকার হয় তা বাড়াতে সাহায্য করে।”
ভালো ডায়েট ও ব্যায়াম কি অন্যভাবে সাহায্য করতে পারে?
ভালো ডায়েট, ভালো ঘুম এবং ব্যায়াম অন্যান্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হাই কোলেষ্টেরল, ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে কোমরবিডিটি (শরীরে একাধিক রোগের উপস্থিতি) কমাতে সাহায্য করে।
একাধিক গবেষণায়, এখানে আর এখানে, দেখানো হয়েছে যাদের কোমরবিডিটি আছে তাদের কোভিড -১৯ সংক্রমণের মাত্রা এবং প্রবলতা অনেক বেশী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তবে, ডায়েটেসিয়ান ও নিউট্রিসনিস্ট কাজল গুপ্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “ভালো খাবার একটি আপেক্ষিক কথা। সুষম খাদ্য এবং পরিপূরক গ্রহণ করা দরকার যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রত্যেকটি ভিটামিন ও মিনারেল আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েটে এগুলি যেন থাকে তা সবারই মনে রাখা উচিত।”
Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.