হ্যাণ্ড স্যানিটাইজারের কারণে হাত পুড়ে যাওয়া: কেন ফ্যাক্ট চেকার রা ব্যাপারটা ঠিক ধরতে পারে নি

Published on:

সারমর্ম

Fact-Check-Health-News-False

দুটি পোড়া হাতের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে এই মহিলার হাতে স্যানিটাইজার লাগিয়েছিলেন এবং তারপরে তিনি রান্না করতে গিয়েছিলেন। হাতের স্যানিটাইজারে থাকা অ্যালকোহলটির কারণে তার হাত আগুনে মারাত্মকভাবে পুড়িয়ে দেয়। জবাবে, কয়েকটি সত্যানুসন্ধানী মাধ্যম(ইন্ডিয়া টুডে সহ) জ্বলন্ত চিহ্নগুলির ধরণের উপর ভিত্তি করে এটিকে প্রতারণামূলক হিসাবেই চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু আমাদের তদন্ত অনুসারে ইন্ডিয়া টুডে-এর করা অনুসন্ধান আসলে ভুল, যে ধরনের ক্ষত দেখা যাচ্ছে তা যেমন সত্যি তেমনি হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার অগ্নি সম্বন্ধিত এই ধরনের আঘাতের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

দাবি

ছবিতে দেখতে পাওয়া এই ধরনের ক্ষতের মূল কারণ হল হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পর রান্নার কাজ করা।   হ্যাণ্ড স্যানিটাইজারে আলকোহলের উপস্থিতি থাকায় তা খুব সহজেই গ্যাস স্টোভ থেকে আগুনকে আকৃষ্ট করে। যদিও, ক্ষতের শেষের কিনারাগুলিকে খতিয়ে দেখে ইন্ডিয়া টুডে সহ বেশ কিছু সত্যানুসন্ধানী মাধ্যম দাবি করেছে যে এই ছবিটি মিথ্যা। (সুত্র: ইন্ডিয়া টুডে; সংরক্ষিত লিঙ্ক-এর জন্য এখানে ক্লিক করুন)

সত্যানুন্ধান

এগুলি কী সত্যি পুড়ে যাওয়ার ক্ষত হতে পারে? ক্ষতের কিনারাগুলি পরিষ্কার হওয়া কী প্রমাণ করে যে এটি মিথ্যা?

আমরা যে সকল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেছি তাদের মতে, এই ক্ষতগুলি সত্যি হতেও পারে।
ক্ষতের কিনারাগুলি পরিষ্কার হওয়া প্রমাণ করেনা যে এগুলি পুড়ে যাওয়ার ক্ষত নয় বরং স্কিন গ্র্যাফ্টিং, অর্থাত্‍ অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে শরীরের কোনও স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করা। ( যা ইন্ডিয়া টুডে-এর তরফে দাবি করা হয়েছে)

Dr-Joyeeta-Chowdhury-Dermatologist

ড. জয়িতা চৌধুরী, এমডি, সহকারী অধ্যাপক, ত্বক-বিজ্ঞান, এনআরএস মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল জানিয়েছেন, “আমার মনে হয় না এটি মিথ্যা। ক্ষতের কিনারাগুলি পরিষ্কার হওয়ার কারণ হল সেই সময় হয়তো সেই মহিলা এমন কোনও পোশাক পড়েছিলেন যা তাকে রক্ষা করেছে।  যার কারণে এটিকে একদম মিথ্যা বলা যায় না। যে কারণে এই ক্ষতটিকে স্কিন গ্র্যাফ্টিং বলা হচ্ছে তার কারণ জেনোলেট ড্রেসিং যা আগুন থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনার ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ। ডান হাতের উপর ক্ষত পুড়ে যাওয়ার ক্ষতের তীব্রতা প্রমাণ করছে।”

ড. দীপ্তি ঘিয়া, ত্বক বিশেষজ্ঞ পরামর্শক, যশলোক হাসপাতাল এবং রিসার্চ সেন্টার জানাচ্ছেন, “ছবিটি দেখে গ্র্যাফ্টিং-এর আঘাত বলে মনে হচ্ছে না। হাতঘড়ি পড়ার জায়গাটি বাদে আশেপাশের জায়গাটির ক্ষত দেখে এটিকে উপর উপর একটি অগ্নি সম্বন্ধিত ক্ষত বলে মনে হচ্ছে।

এগুলি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের আগুন ধরার কারণে হতে পারে?

ড. চৌধুরী জানাচ্ছেন, “সম্ভব।  সাধারণ হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আপাতদৃষ্টিতে, এগুলি ব্যবহার করাতে কোনও বিপদ নেই। কিন্তু, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে বর্তমানে বহু মানুষ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন। আপনি যদি খুব বেশি হারে হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা শুরু করেন, তাহলে তা শুকতে অনেকটাই সময় নেবে। এই সময়, আগুনের কাছে গেলে তার থেকে বিপপদ হতেই পারে। এর কারণ, হ্যাণ্ড স্যানিটাইজারের মধ্যে আলকোহল থাকে, যা অগ্নিদাহ্য।

ড. ঘিয়া জানাচ্ছেন, “স্যানিটাইজারের মধ্যে 60% আলকোহল থাকে যা প্রকৃতিতে অগ্নিদাহ্য। কতটা পরিমাণে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে সেই ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার এবং যতক্ষণ না স্যানিটাইজার পুরোপুরিভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ আগুনের কাছে যাওয়া উচিত না।  “

হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা

ড. ঘিয়া ব্যাখ্যা করেছেন যে, “ আপনি যদি এই লকডাউনের সময় বাড়িতে থাকেন, তাহলে স্যানিটাইজারের বদলে সাধারণ সাবান এবং জল ব্যবহার করতে পারেন। হাত কমপক্ষে 20 সেকেন্ড ধরে ঘষতে হবে।  এই পদ্ধতি অনুসরণ করে চললে তা স্যানিটাইজারের মতোই কাজে দেবে। যারা বাইরে যাতায়াত করেন তাদের জন্য স্যানিটাইজার ব্যবহার করা সুবিধাজনক। যেহেতু বাইরে বেরোলে সাবান এবং জল পাওয়া খুব মুশকিল। এছাড়াও, সবার মনে রাখা দরকার যে স্যানিটাইজার কম পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত (একটি মটর ডালের পরিমাণ) এবং কমপক্ষে 20 সেকেন্ড হাত ঘষতে হবে। এছাড়াও হাত যে স্যানিটাইজার শুষে নিয়েছে তাও সুনিশ্চিত করতে হবে। যদি 20 সেকেন্ডের মধ্যে এটি হাতে শুকিয়ে না যায়, তাহলে বুঝতে হবে যে এটি বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও, যারা হাতে চর্মরোগ রয়েছে, তাদের স্যানিটাইজার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। তাদের হাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। না হলে স্যানিটাইজারের বারবার ব্যবহার করলে তা ত্বক আরো শুষ্ক করে তুলতে পারে এবং চর্মরোগ বাড়িয়ে তুলতে পারে।”

ড. চৌধুরী একইসঙ্গে জানিয়েছেন যে, “বাড়িতে থাকাকালীন স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরিমাণ সম্বন্ধে সংযত হয় দরকার। সাবান এবং জল ব্যবহার করে স্যানিটাইজারের মতোই ফল পাওয়া যায়। অতিরিক্ত চাহিদার ফলে হাসপাতালগুলিতে এখন স্যানিটাইজারের অভাব দেখা যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, হাসপাতালে কাজ করা ব্যক্তিদের হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করাটা একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। তাই ঘরে যারা রয়েছেন তারা স্যানিটাইজার ব্যবহার নাও করতে পারেন।

Disclaimer: Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can futher read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.

Disclaimer
Medical Science is an ever evolving field. We strive to keep this page updated. In case you notice any discrepancy in the content, please inform us at [email protected]. You can further read our Correction Policy here. Never disregard professional medical advice or delay seeking medical treatment because of something you have read on or accessed through this website or it's social media channels. Read our Full Disclaimer Here for further information.

151,732FansLike
1,142FollowersFollow
250SubscribersSubscribe

READ MORE

Subscribe to our newsletter

Stay updated about fake news trending on social media, health tips, diet tips, Q&A and videos - all about health